Wednesday, May 22, 2013

IRAN CRISIS


ইরান সংকট ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি

ভাঙবে, তবু মচকাবে না বলে যে পণ তারা করেছে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে, তা থেকে চুল পরিমাণও নট-নড়নচড়ন। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সঙ্গে জার্মানি গাঁটছড়ায় বাঁধা পড়ে সেই যে ২০০৩ সাল থেকে ইরানকে বাগে আনতে কালঘাম জারি রেখেছে, তা থেকেও আজতক ফলদায়ী কোনো বার্তা শোনেনি বিশ্ববাসী। কাজাখস্তানের আলমাতিতে শেষ হওয়া দুই দিনের ইরান বনাম এই 'ষষ্ঠপাণ্ডবে'র আলোচনাও আরেক দফা নিষ্ফল হলো। তার মানে, এ দুয়ের ডামাডোল চলছে, চলবে। এদিকে এর ফ্যাঁকড়ায় বেচারা সাধারণ ইরানিদের অবস্থা কাহিল! অবরোধ-নিষেধাজ্ঞায় ক্রমে রুগ্ণ হওয়া অর্থনীতির মাশুল গুনছে তারা। আর ইরানকে শিখণ্ডী হিসেবে সামনে রেখে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি গরম করার পাঁয়তারায় ব্যস্ত কত না মহাজন!
'ভার্চ্যুয়াল' কোনো বিষয়েও যে বাস্তবিক সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা বিশ্বব্যাপী ছড়ানো যায়, তার 'দৃশ্যমান' প্রমাণ ইরানের পরমাণু কর্মসূচি। তুমুল আলোচিত এবং সম্পূর্ণ অমীমাংসিত ইরানের এই 'মারাত্মক' অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমারা বেজায় নাখোশ। বিশ্বের এই প্রান্ত ওই মাথা পর্যন্ত নিরাপত্তার দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটে তাঁদের। হাজার হোক, বিশ্ববাসীর জান-মালের 'নিরাপত্তার' ভার তো তাদেরই কাঁধে! দুর্বৃত্ত ইরানকে বিশ্বাস কি, কখন দুম করে কোথায় ঠুস করে বোমা ফেলে বসে! পশ্চিমা মুরবি্বদের 'কপোলকল্পিত' এই হামলার দুর্ভাবনায় যারপরনাই বেচইন বেচারা ইসরায়েল। ইরানকে এক হাত দেখে নেওয়ার ব্যাপারে তড়পানিও তাই তাদের এক কাঠি বেশি। বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় আর কি! কিন্তু ইরান নাছোড় বান্দা। হুমকি-ধমকি, শাসানি, চোখরাঙানি- কোনো কিছুই তাদের জানে ভয় ধরায় না! পশ্চিমাদের থোরাই কেয়ার তাদের। নিজেদের অবস্থানে অনড়-অটল। পশ্চিমাদেরও সকাল-সন্ধ্যা এক বুলি, ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকা মানে তামাম দুনিয়ার বারোটা! অতএব ইরানের পরমাণু অস্ত্রের খায়েশ যেনতেন প্রকারেণ হোক মিটিয়ে দিতেই হবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা!

ইরাকের গল্প, ইরানের প্লট
এই যে ক্ষুদ্রতর এক পক্ষের বিপরীতে বৃহৎ পশ্চিমা জোটের একতরফা দোষারোপ, বল প্রয়োগ, 'প্লট'টা কিন্তু চেনা। ইরানের পরমাণু ইস্যুতে পশ্চিমাদের এই যুদ্ধংদেহি আচরণ এক দশক আগে ইরাক ধ্বংসের গল্পটিকে মনে করিয়ে দেয়। গণবিধ্বংসী অস্ত্র মজুদ থাকার তথ্যসাবুদ নাকি ছিল পশ্চিমাদের এক হাতে। তাই অন্য হাতে ইরাক আগ্রাসনের 'আদেশনামা' উঁচিয়ে ধরে তারা। কিন্তু পরে অস্ত্র তো দুর কি বাত, অস্ত্রভাণ্ডারের ইটকাঠও দুনিয়ার সামনে প্রমাণের সপক্ষে হাজির করতে ব্যর্থ হয় মার্কিন দুঁদে গোয়েন্দারা। কিন্তু তত দিনে গোটা একটি দেশের 'ইটকাঠ' সব খুলে একাকার! গণবিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যাপারে ঝানু সিআইএর 'নিশ্চিত' অনুমানের পরিণতি ডেকে আনে ইরাকের নিশ্চিত ধ্বংস। প্রেক্ষাপটটি মনে রাখলে আশঙ্কা আপনাআপনি মনে ভর করে, তবে কি আরেকটি 'ইরাক' হতে যাচ্ছে ইরান?
১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লব মূলত পশ্চিমাদের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের 'ইউটার্ন'। সেই থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও 'পরিবর্তিত' ইরান পরস্পরের চক্ষুশূল। ওই বছরের ১৬ জানুয়ারি দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে ইরানের শাহ গদি ছাড়তে বাধ্য হন। তখন তাঁর ঘনিষ্ঠতম মিত্র ছিল যুক্তরাষ্ট্র। একই বছর ৪ নভেম্বর রাজধানী তেহরানে মার্কিন দূতাবাসের ৬৩ কর্মীকে জিম্মি করে ইরানি ছাত্ররা। ফলে দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন শীর্ষবিন্দু ছোঁয়! সেই টাল খাওয়া বেহাল সম্পর্ক এত দিনেও হালে ফেরেনি।
মার্কিনিদের জিম্মির পর ছাত্রদের প্রথম ও প্রধানতম দাবি ছিল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে শাহকে দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। অপকর্মের দায় না মিটিয়ে পগার পার হয়ে মার্কিন মুলুকে থিতু হবে, তা হবে না। বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে শাহকে। ইরানের ঘরের বিষয়ে বাইরে থেকে 'নাক গলানো' বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে অঙ্গীকার করতে হবে, এমন দাবিতেও সোচ্চার ছিল ছাত্ররা। চলে দফায় দফায় বৈঠক ও দীর্ঘ দেনদরবার। শেষতক ১৯৮১ সালের ২০ জানুয়ারি জিম্মি সব মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেয় ইরানি কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে পশ্চিমাদের 'কালো তালিকায়' ইরান।

অশুভ অক্ষ, শুভ জোট
ইরানের বেয়াড়া আচরণে যুক্তরাষ্ট্র খুব চটা। পশ্চিমা বিশ্বের বৃহৎ রাষ্ট্র ও অন্যতম মাতব্বর এ দেশটির মিত্র ও জোটের জ্বলুনি কিছু কম না! ১৯৯৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ইরানের ওপর তেল ও বাণিজ্যবিষয়ক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। অভিযোগ ছিল- সন্ত্রাসে মদদ দিচ্ছে ইরান। পরের বছর ওই নিষেধাজ্ঞার খড়গে আরো ধার দেওয়া হয়। সেই থেকে পশ্চিমারা 'নিয়ম করে' অবরোধ-নিধেষাজ্ঞার হাতিয়ার এস্তেমাল করে চলেছে।
২০০২ সালে তৎকালীন 'যুদ্ধবাজ' মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ বলেন, ইরাক, ইরান ও উত্তর কোরিয়া এই তিনে মিলে তৈরি হয়েছে এক 'অশুভ' অক্ষ। এর 'উচিত' জবাব হলেও হতে পারে, ওই বছরের সেপ্টেম্বরে বুশেহর শহরে প্রথম পারমাণবিক চুলি্ল নির্মাণের কাজ শুরু করে ইরান। রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সহায়তায় ওই প্রকল্প নিয়ে প্রবল আপত্তি তোলে যুক্তরাষ্ট্র। দুই মাস না যেতেই ডিসেম্বরে অভিযোগ তোলে তারা, ইরান গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির ধান্ধা করছে। সেই থেকে ওই এক 'কলের গান' এখনো টানা বাজিয়ে চলেছে পশ্চিমারা। এ পরিসরে তারা নিজেরা 'শুভ' জোট বেঁধেছে, ইরানকে ছবক দেওয়ার। বারবার অবরোধ-নিষেধাজ্ঞার জাঁতাকলে ফেলা হচ্ছে ইরানকে। কিন্তু এতে দেশটিকে শায়েস্তা করাও যাচ্ছে না, বাগে আনাও যাচ্ছে না!

প্রাচ্যের মধ্য, সমস্যার কেন্দ্র
এ অঞ্চলের সবচেয়ে সেকুলার রাষ্ট্র সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। শিয়াপন্থী ইরান সিরিয়ার আসাদের প্রতি সমর্থনে রাখঢাক রাখেনি। পশ্চিমা গণমাধ্যমের কথা সত্যি হলে, পতনের দোরগোড়ায় আসাদ সরকার। তা-ই যদি হয়, চূড়ান্ত পতন মানে শিয়া-সুনি্ন বিরোধ আরো চরমে ওঠার আশঙ্কা! পশ্চিমাদের মদদপুষ্ট ইসলামপন্থীদের বিজয় যতটা না আশঙ্কার, তার চেয়ে বড় ভাবনার কারণ হবে কোণঠাসা কুর্দিদের স্ফুরণ। আর তা হলে তার পরিণামও হবে সুদূরপ্রসারী। ফলে সিরিয়া আক্রান্ত হলে তার পরিণতি হবে সমগ্র অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা। আর সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া না মার্কিন জোট না রাশান মিত্রশক্তি- কারো পক্ষেই সহজ হবে। ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী দেশটির চারদিকে ইরাক, তুরস্ক, লেবানন ও জর্দানের অবস্থান। ফলে লেবানন থেকে গাজা, লিবিয়া থেকে ইরাক-ইরান পর্যন্ত যে আজদাহা অস্থিরতা ফুঁসে উঠবে, তাতে পশ্চিমাদের স্বার্থ-খুঁটি ভেঙে পড়ারও উপক্রম হবে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তেল-গ্যাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ ও মার্কিন সামরিক ঘাঁটি নিরাপদ রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। জিগরি দোস্ত ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও সহজ হবে না যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে। তাই ইরানকে ঠাণ্ডা করা গেলে ঝুঁকি অনেকটা কমে। এই সরল অঙ্কের নিয়মে ইরানের হাত কমজোরির পক্ষে পশ্চিমারা। আসাদের হাতে রাসায়নিক অস্ত্র থাকার জোর সন্দেহ আছে। কোন ফাঁকে পরমাণু অস্ত্রের মালিক বনে গেছে, তারও ঠিক নেই! ইরাকও যদি অস্ত্রধারী হয়, তবে এ অঞ্চলে মার্কিন মাতব্বরির ভাত উঠে যাবে।

সম্পদের শক্তি, সম্পদের ভয়
তেল উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বে ইরানের অবস্থান চতুর্থ। তাই দেশটির ওপর অবরোধ আরোপের অর্থ হররোজ অন্তত দুই দশমিক দুই মিলিয়ন ব্যারেল জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমে যাওয়া। এতে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম হয় ঊর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশের বিদ্যুৎ বহুলাংশেই জ্বালানি তেলনির্ভর। ফলে এসব দেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ে। আর বিদ্যুতের দাম বাড়া মানে অন্যান্য জিনিসেরও উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া। যার প্রভাব পড়ে পুরো অর্থনীতির ওপর।
ইরানের তেল রপ্তানির প্রায় ১৮ শতাংশই যায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে। চীনের পরই ইরানের তেলের দ্বিতীয় বড় ক্রেতা ইইউ। ইরানের বৈদেশিক আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে তেল রপ্তানি থেকে। তাই এই খাতের ওপর অবরোধ আরোপ মানে দেশটির অর্থনীতির ওপর 'গজব' নেমে আসা। আর এর আসর গিয়ে পড়ে জনগণের ঘাড়ে, ভুক্তভোগী হয় সাধারণ মানুষ। ফলে ইরানি তেলের বিশ্ববাজার সংকুচিত হওয়া মানে, আখেরে ইরানের হাত খালি হয়ে পড়া। তাই তেল তাদের বড় শক্তি হলেও, বড় ভয়েরও কারণ তা। পশ্চিমারাও এই পয়েন্টে ইরানকে কাবু করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথে হাঁটছে।

পশ্চিমাদের শঙ্কা, মার্কিনদের চিন্তা
বছর খানেক আগে পারস্য উপসাগরে ইরানের নৌমহড়াটি ছিল জমকালো। ওই মহড়ার 'পাওয়ার' পর্বে 'কাদের' নামের মাঝারিপাল্লার সাগর থেকে ভূমি এবং ভূমি থেকে সাগরে ক্ষেপণযোগ্য মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হয়। এ খবরে বিচলিত হয়ে পড়ে পশ্চিমারা। মিসাইলটি অনায়াসে ২০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্য ভেদে সক্ষম। ইরান থেকে বাহরাইনের দূরত্ব ২২৫ কিলোমিটার, যেখানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহরের সদর দপ্তর। মুসিবত কাকে বলে! আরো চমকপ্রদ খবর হলো, আধুনিক এই মিসাইলগুলো লক্ষ্য খুঁজে বের করতে তো পারেই, শত্রুর রাডারকেও ফাঁকি দিতে সক্ষম। অন্তত ইরানের দাবি এমনটাই। এ ছাড়া 'নূর', 'ঘাদির', 'নামের', 'মেহরাব' নামের বিভিন্ন দূরত্ব অতিক্রমে সক্ষম মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করা হয় মহড়ায়। সাবমেরিন থেকে 'টর্পেডো' নিক্ষেপ কিংবা ভূমি ও জাহাজ থেকে বিমানবিধ্বংসী মিসাইল উৎক্ষেপণের সফল পরীক্ষাও চালায় ইরান। অন্যদিকে তাদের রয়েছে 'সাহাব' কিংবা 'সাজ্জিল'-এর মতো দূরপাল্লার মিসাইল, যা এক হাজার ৩০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ইরান থেকে ইসরায়েলের দূরত্ব এক হাজার কিলোমিটার। ফলে ইরানের বিরুদ্ধে শিগ্গির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ইসরায়েলের চাপ অব্যাহত। এককভাবে সামরিক হামলা চালানোর হুমকিও দিয়ে যাচ্ছে তারা। কিন্তু ইরান এতে কর্ণপাত করছে, কিছুতে তার প্রমাণ নেই। উপরন্তু তাদের দাবি, সাগরতলে মাইন বসিয়ে হরমুজ প্রণালিকে জাহাজ চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত করে দেওয়ার ক্ষমতা তাদের আয়ত্তে। জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত ব্যস্ততম নৌপথগুলোর মধ্যে হরমুজ প্রণালির অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়। ৩৪ মাইল প্রশস্ত এই নৌপথের একদিকে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি সামরিক শক্তির দেশ ইরানের অবস্থান, অন্যদিকে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মতো সামরিকভাবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলোর অবস্থান। আমেরিকান এনার্জি ইনফরমেশন এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে এই নৌপথ দিয়ে প্রতিদিন ১৭ মিলিয়ন ব্যারেল জ্বালানি তেল বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে। ২০০৯ সালে এর পরিমাণ ছিল ১৫ মিলিয়ন ব্যারেল। তার মানে, পশ্চিমাদের আঘাতের প্রথম জবাব দেবে ইরান হরমুজ প্রণালির রাস্তা বন্ধ করে। ফলে চাইলাম আর ইরানের দিকে যুদ্ধবিমান ছোটালাম, এত সহজে অঙ্ক মেলা কঠিন।

জুজুর ভয়, সত্যি আশঙ্কা
এই যে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার বোলচাল প্রতিদিন উচ্চারিত হচ্ছে, বাস্তবে তার কতটা ফলতে দেখেছে বিশ্ব? ইরান বা উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে রক্ত হিম করা যত আশঙ্কার কথা শোনা যায়, তার কোনো আছর তো পড়তে দেখা যায় না চোখের সামনে! তবে কি কেবলই 'কৃত্রিম' উত্তেজনা তৈরি করে পশ্চিমাদের অস্ত্র বিক্রির ফাঁদ এটি? 'অশুভ' অক্ষের একটার তো কোমর ভেঙে দেওয়া গেছে, আরেকটি অবশ্য এখনো লাফঝাঁপ দিয়ে যাচ্ছে। তারা এর মধ্যে তিন দফা ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষাও চালিয়েছে। সম্প্রতি খামেনির দেওয়া বক্তব্য সত্যি হলে, ইরান চাইলে শিগগিরই তারা পরমাণু অস্ত্রের মালিক হতে পারে। যে অস্ত্রের 'ভয়' দেখিয়ে বিশ্বকে ঠাণ্ডার রাখার কৌশল নিয়েছে পশ্চিমারা, তাই যদি এখানে-সেখানে 'উত্তাপ' ছড়ায়, তবে মাতব্বরদের দিন ফুরাতে বেশি দেরি নেই! নাকি সত্যি সত্যিই বিশ্বশান্তির জন্য অশুভ বার্তা বয়ে নিয়ে আসবে এ অস্থিরতা?

No comments:

Post a Comment