প্রতিবেশীর
আতঙ্ক বাড়াতে আইএস
জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে পাকিস্তানই!
আমেরিকা
কি সিরিয়ায় আইএস-এর বিরুদ্ধে অভিযানে বড় কোনও সাফল্য পেয়েছে? মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ট্যুইট সেই জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন সময়
শনিবার রাতে ট্রাম্প ট্যুইটারে লেখেন, ‘এইমাত্র খুব বড় একটা
ঘটনা ঘটল।’ তার মধ্যেই হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস
সেক্রেটারি হোগান গিডলে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘মার্কিন সময়
রবিবার সকাল নটায় বিরাট ঘোষণা করতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’ মার্কিন সাপ্তাহিক ‘নিউজউইক’ পদস্থ
এক সেনা আধিকারিককে উদ্ধৃত করে দাবি করেছে, অভিযানে নিহত
হয়েছে বাগদাদি। যদিও কোথায়, কী ভাবে সেই সাফল্য এসেছে,
সে বিষয়ে ওই সেনা আধিকারিক কিছু বলতে চাননি। এ ক্ষেত্রেও অবশ্য নাম
প্রকাশ করতে চাননি ওই সেনাকর্তা। তাহলে কি সত্যিই আইএস শীর্ষ নেতা আবু বকর আল
বাগদাদি নিহত? যদিও গত পাঁচ বছরে একাধিক বার তার মৃত্যুর খবর
এসেছে। কখনও আবার রকেট হামলায় জখম বলে শোনা গিয়েছে। কিন্তু সব জল্পনা উড়িয়ে বারবার
আবির্ভাব ঘটেছে কুখ্যাত জঙ্গি আবু বকর আল বাগদাদির।
ডোনাল্ড
ট্রাম্প গত বছরও জঙ্গি সংগঠন আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চূড়ান্ত বিজয় ঘোষণা করে একটি ট্যুইটে
লিখেছিলেন, ‘আইএস পরাজিত হয়েছে। তুরস্কসহ অন্য সব দেশ এখন নিজেরাই অবশিষ্ট জঙ্গিদের
সামলাতে পারবে। আমরা এখন (সিরিয়া থেকে) দেশে ফিরছি!’ ওই বছরে
তিন মাসের মধ্যে অন্তত ১৬টি ট্যুইট বার্তায় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, আইএস পরাজিত হয়েছে অথবা পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু
মার্কিন প্রতিরক্ষা এবং বিদেশ দপ্তরের দুই শীর্ষকর্তা এবং ইউএস এজেন্সি ফর
ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের কর্তা ট্রাম্পের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরা
মার্কিন কংগ্রেসে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে বলেছিলেন, জমি
হারালেও আইএস জঙ্গিরা এখনও সিরিয়া ও ইরাকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এবং আবার তারা তাদের
খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নিউ
আমেরিকার সিইও অ্যান মারি স্লটার এবং জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আসা সি
ক্যাসলবেরি জানাচ্ছেন, ‘সিরিয়া থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সব মার্কিন সেনা এবং
আফগানিস্তান থেকে অর্ধেক সেনা সরিয়ে নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত ট্রাম্প নিয়েছিলেন,
সেই সিদ্ধান্তই আইএসের তৎপরতা বৃদ্ধির আংশিক কারণ। ট্রাম্পের এই
সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে না পারার কারণে প্রতিরক্ষা দপ্তরের দায়িত্ব থেকে জেমস
ম্যাটিসকে সরে যেতে হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের কারণে আমেরিকার আঞ্চলিক পার্টনারদের
সন্ত্রাস মোকাবিলায় জোর ধাক্কা খেতে হচ্ছে। শুধু তাই-ই নয়, ইরাকের বাগদাদ, নিনেওয়া ও আল আনবার প্রদেশ ছাড়াও মধ্য ইউফ্রেটিস রিভার ভ্যালি এলাকায় আইএস
জঙ্গিরা আবার ধীরে ধীরে সংগঠিত হচ্ছে। সিরিয়ায় আল রাক্কা এবং হোমস প্রদেশে আইএস
আবার শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। আইএসের যুদ্ধক্ষেত্র এখন যতটা না ‘ফিজিক্যাল’, তার চেয়ে অনেক বেশি ‘ডিজিটাল’। এই দিকে নজর রেখে আমেরিকাকে অবশ্যই সজাগ
হতে হবে। বিশেষত, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আইএস যাতে শক্তি
সঞ্চয় না করতে পারে, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে হবে।’
সবচেয়ে
আতঙ্ক এখন আফগানিস্তানকে নিয়ে। আফগানিস্তানের ইসলামিক স্টেট (আইএস) স্থানীয়ভাবে
ইসলামিক স্টেট ইন খোরসান (আইএসআইকে) নামে পরিচিত। ২০১৪ সালে প্রথম আইএসের উপস্থিতি
টের পাওয়া গিয়েছিল আফগানিস্তানে। যদিও পেন্টাগন সেই জঙ্গিগোষ্ঠীটিকে পাকিস্তানি
তালিবানের একটি বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী বলে পাত্তা দিতে চায়নি। বর্তমানে এর সদস্যসংখ্যা
তিন হাজারের বেশি। আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে প্রধানত, কুনার, নানগারহার, নুরিস্তান ও লাঘমান প্রদেশে তাদের শক্ত
ঘাঁটি রয়েছে। সাম্প্রতিক কালে উত্তরের কুন্দুজ ও পশ্চিমের হেরাতে আইএসআইকে তাদের
ঘাঁটির বিস্তার ঘটিয়েছে। কাবুলে তাদের ইউনিটটি সবচেয়ে মারাত্মক। কারণ, ২০১৮ সালে
গোষ্ঠীটি কাবুলে এককভাবে ২৪টি হামলা চালায়। এই সংখ্যা হাক্কানি নেটওয়ার্কের চালানো
হামলার সংখ্যাকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল রাখমত আকিলভ নামে এক উজবেক সুইডেনের স্টকহোমে জঙ্গি
হামলা চালায়, যাতে পাঁচজন মারা যায়। সেই আকিলভের মগজধোলাই
হয়েছিল নানগারহারের একজন আইএস নেতার হাতেই। সম্প্রতি প্রকাশিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের এক
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের প্রথম ছয় মাসে আফগানিস্তানে
৩ হাজার ৮৮১ জন অসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৪২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে আইএসআইকে
জঙ্গিদের হাতে।
আইএস
বরাবরই রাজনৈতিক শূন্যতা ও অরক্ষিত পরিবেশের সুযোগ নিয়ে এক একটি এলাকায় অনুপ্রবেশ
করে। সেই দিক দিয়ে আফগানিস্তান তাদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা। দুই বছর আগে
ইরাকের মসুল পতনের পর সেখান থেকে পালিয়ে চলে আসা কয়েকজন তরুণ আইএস সদস্যের
সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন পাকিস্তানের ডন পত্রিকার সাংবাদিক আরসালা জাওয়াইদ। তাঁর
কথায়, ‘ওই আইএস জঙ্গিদের প্রায় সবার কথায় একটি অভিন্ন ভাষা ছিল। বয়সে তরুণ জঙ্গিরা
যখন শাসনক্ষমতার খুব কাছে যাওয়ার সুযোগ পায়, তাদের সিদ্ধান্ত যখন গুরুত্বের সঙ্গে
বিবেচনা করা হয়, তখন তারা আইএসে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে
ওঠে। একেকটি শহর পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় অল্পসংখ্যক তরুণকে। এই শাসনক্ষমতার
লোভ দেখিয়ে আফগানিস্তানেও তরুণদের আইএস দলে ভেড়াচ্ছে। আইএস মনে করছে, তালিবানের তরুণ জঙ্গিদের যত দ্রুত দলে ভেড়ানো যাবে, তত
তাড়াতাড়ি আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব হবে।’
ভয় একটাই!
দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে আইএস জঙ্গিরা। বছর দুই আগে, ফ্রান্স জানিয়েছিল, তাদের দেশ থেকে
১ হাজার ৭০০ জন আইএসের হয়ে লড়াই করতে দেশ ছেড়েছিল। এদের মধ্যে ৪০০ থেকে ৪৫০ জন
মারা পড়েছে। দেশে ফিরেছে ২৫০ জন। ফরাসি বিদেশমন্ত্রী জ্যঁ-ইভ লুদরিও জানিয়েছিলেন,
ইরাক ও সিরিয়ায় এখনও ৫০০ ফরাসি আইএসের হয়ে লড়ছে। তাদের জন্য এখন
ফ্রান্সে ফিরে আসাটা বেশ কঠিন। এর বাইরেও ৫০০ জনের কোনও হদিসই নেই। তারা যুদ্ধের
কৌশল রপ্ত করেছে, বোমা বানাতে পারে। আমেরিকার জর্জটাউন
বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ ব্রুস হফম্যান জানিয়েছেন, হাজার হাজার আইএস জঙ্গি ইরাক-সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়েছে। তাদের
অনেকে এখন বলকান অঞ্চলে গা ঢাকা দিয়েছে। সুযোগ খুঁজছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঢোকার
জন্য। সন্ত্রাসবাদ-বিষয়ক আরেক বিশেষজ্ঞ থমাস স্যান্ডার্সের মতে, অন্তত ৮০ জন আইএস জঙ্গি ফিলিপিন্সের দক্ষিণাঞ্চলে আবু সায়েফ বিদ্রোহীদের
সঙ্গে যোগ দিয়েছে। তারা মরক্কো, সৌদি আরব, রাশিয়া ও ইয়েমেন থেকে পালিয়ে আইএসে যোগ দিয়েছিল। আফগানিস্তানের
উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ফরাসি ভাষায় কথা বলে,
এমন আইএস জঙ্গিরা তাদের এলাকায় ঢুকে পড়েছে। অনেকে সাধারণ মানুষের
সঙ্গে মিশে গিয়েছে।
সম্প্রতি ভারতে
নয়া ‘প্রদেশ’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেছে জঙ্গি সংগঠন আইএস। গত
মে মাসে কাশ্মীরের সোপিয়ানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ইশফাক আহমেদ
সোফি ওরফে আবদুল্লা ভাই নামে এক জঙ্গির। ওই দিনই নিজেদের মুখপত্র ‘আমাক’-এ ‘উইলায়া অব হিন্দ’
অর্থাৎ ভারতীয় প্রদেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করছে ওই জঙ্গি সংগঠন। তবে
সোফিকে আবু নাদের আল কাশ্মীরি বলে চিহ্নিত করে তারা। তার আগে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ‘আল রিসাল্লাহ্’ পত্রিকায় সোফির একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকার সত্যতা যদিও
যাচাই করা যায়নি, তবে বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইেট সেই
সাক্ষাৎকার কিছু অংশ ছড়িয়ে পড়ে। তাতে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে, হাতে বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় সোফিকে। নিজেকে উত্তর কাশ্মীরের
বারামুল্লার বাসিন্দা বলে জানায় সে। তবে ওই পত্রিকার সঙ্গে আইএস-এর যোগ নাও থাকতে
পারে বলে পুলিস সূত্রে বলা হয়েছে। তাদের যুক্তি, আইএস-এর
পত্রিকাগুলি দেখলে বোঝা যায়, পেশাদার লোক নিয়োগ করে সেগুলি
তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ‘আল রিসাল্লাহ্’ পত্রিকায় তার কোনও বৈশিষ্ট্যই চোখে পড়েনি। গোয়েন্দারা বারবার সতর্ক করছে,
ভারতে হামলা চালাতে পারে আইএস, নজরে কাশ্মীর এবং দক্ষিণের
রাজ্যগুলি। কেরল পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছরে
রাজ্য থেকে প্রায় ১০০ জন আইএসে যোগ দিয়েছে। তাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছিল আরও
কয়েক হাজার মানুষ। রাজ্যের ২১টি কাউন্সেলিং সেন্টারে তাদের মধ্যে তিন হাজার জনকে
মূলস্রোতে ফেরানো গিয়েছে। তবে নজরদারির মধ্যে রয়েছে তারা। গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তা
পেয়ে রাজ্যের নিরাপত্তা আটোসাঁটো করা হয়েছে। নজরদারি চলছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।
খোঁজ নিয়ে
জানা গিয়েছে, প্রথমে পাকিস্তানি তালিবানদের একটি দুর্বল জোট হিসেবে যে গোষ্ঠীটিকে
বিবেচনা করা হয়েছিল,
সেই আইএসআইকেতে এখন কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান,
ইরাক ও সিরিয়ার জঙ্গিরাও যুক্ত হয়েছে। বহু আফগান যুবক ও তালিবান ছেড়ে
আসা জঙ্গিরাও তাদের যোদ্ধা। ওই জঙ্গিদের নাকি আফগান মানদণ্ডে বেশ ভালো অর্থ দেওয়া
হয়। কোনও কোনও এলাকায় এই অর্থের পরিমাণ মাসে কয়েকশো ডলার। সংবাদমাধ্যমের খবর
অনুযায়ী, কাঠ, মাদক ও খনি থেকে পাওয়া
মূল্যবান পাথর পাচার করে এবং তোলা তুলে আইএসআইকে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে।
প্রাথমিকভাবে আরব দুনিয়ার নেতারা আইএসআইকে আর্থিক সহায়তা দিতেন। কিন্তু এখন তারা
স্বনির্ভর হিসেবে বিবেচিত। আব্দুল রহিম মুসলিমদোস্তের মতো কিছু দলছুট আইএস নেতার
মতে, আইএসআইকে পাকিস্তানের সৃষ্টি। আফগান সাংবাদিক আব্দুল
রহিম মুসলিমদোস্ত ইরাকে ও আফগানিস্তানে আইএসের সদস্য ছিল। ২০১৫ সালে সে আইএস সঙ্গ ত্যাগ
করে। বেশ কিছুদিন পাকিস্তানের কারাগারে ও গুয়ানতানামো বের বন্দিশিবিরে বন্দিও ছিল
সে।
অনেকের
যুক্তি, আফগানিস্তানে আইএসআইকের প্রায় রাতারাতি উত্থান এবং তাদের মোকাবিলা করতে আমেরিকার
অনীহায় এই ধারণাই জোরালো হয় যে, তালিবানকে দুর্বল করার একটি গোপন প্রচেষ্টা হিসেবে
আমেরিকাই আইএসআইকে ইন্ধন জুগিয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ যে তত্ত্বটি বিশ্বাস করে সেটা
হচ্ছে আইএসআইকে সিআইএ-র তৈরি করা একটি জঙ্গি সংগঠন, যা পুনরুজ্জীবিত হওয়া তালিবানের
বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মার্কিন সেনাবাহিনী এবং আফগান সরকার গঠন করেছে। এই
তত্ত্বের আরও একটি বিশ্বাসযোগ্য কারণ হল, আফগানিস্তানে অনেক প্যান-ইসলামিক গোষ্ঠীর
উপস্থিতি— তালিবান, আল–কায়েদা এবং এখন আইএসআইকে। একই মতাদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে তারা আফগানিস্তানের
মাটিতে ঘাঁটি গেড়েছে। আফগানিস্তানকে অস্থিতিশীল রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য।
আফগানিস্তানে
শান্তি ফেরাতে পাকিস্তানের সাহায্যে চেয়েছে মার্কিন সরকার। কিন্তু পাক আশ্রিত এবং
পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের জন্য দেশের স্থিতিশীলতাই নষ্ট হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ
তুলেছে আফগান সরকার। সন্ত্রাসে মদত জোগানো নিয়ে এ বার পাকিস্তানকে একহাত নিয়েছেন আফগানিস্তানের
প্রাক্তন গুপ্তচর প্রধান তথা প্রাক্তন অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী আমরুল্লা সালেহ। জয়েশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবার
পাশাপাশি আইএস জঙ্গিদেরও পাকিস্তান অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে দাবি তাঁর। সম্প্রতি
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘তালিবানই অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলিকে জায়গা করে দিয়েছিল। এই মুহূর্তে তালিবান
দমনই প্রধান লক্ষ্য আমাদের। তারপর বাকি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জন আইএস জঙ্গিকে বন্দি করেছে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী।
পাকিস্তান থেকে আর্থিক সাহায্য এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে
তারা। আইএস জঙ্গিদের গতিবিধির উপর নজরদারিতেও পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ধরা
পড়েছে। খোরাসানে আইএস-এর যে শাখা রয়েছে, সড়কপথে পাকিস্তানে
যাতায়াতও আছে তাদের।’ এর আগে আফগান বিদেশ মন্ত্রকের তরফেও
পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছিল। আফগান সরকার বলেছিল, ‘আফগানিস্তান কখনওই পাকিস্তানের পক্ষে বিপজ্জনক নয়। বরং ঠিক উল্টোটাই ঘটছে।
পাক আশ্রিত এবং পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের জন্য আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতাই নষ্ট
হচ্ছে।’
আফগানিস্তানে
সম্প্রতি আইএসের উত্থান,
অর্থের উৎস, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা
বলা হচ্ছে, তা নিয়ে অনেক জল্পনা রয়েছে। আফগানিস্তান কি আদৌ
আইএসের চ্যালেঞ্জকে রুখতে সক্ষম হবে? নাকি আরব দুনিয়ার মতো
ছড়িয়ে পড়বে গোটা এশিয়া ভূখণ্ডে। আর আইএসের সেই উত্থানের দায় নিতে হবে
ইসলামাবাদকেই।
No comments:
Post a Comment